Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

আউশ ধানের উৎপাদন ও পরিচর্যা

বাংলাদেশে তিন মৌসুমে ধানের চাষ করা হয়- আউশ, আমন ও বোরো মৌসুম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৯-১০ লক্ষ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের উৎপাদন করা হয়। যেহেতু আউশ ধানের আবাদ বৃষ্টি নির্ভর, সেহেতু এ ধান উৎপাদনের সেচ খরচ সাশ্রয় হয়। তাছাড়া উচ্চফলনশীল (উফশী) জাতের ধান চাষ করলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। এ বছর কৃষি মন্ত্রণালয় আউশ ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা ও ভর্তুকি প্রদান করছে। এতে অধিক সংখ্যক কৃষক আউশ ধান চাষে উৎসাহী হবেন বলে আশা করা যায়।
 

মৌসুম ও জাত
আউশ ধানের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় ১৫-৩০ চৈত্র (৩০মার্চ-১৫ এপ্রিল)। রোপা আউশের উফশী জাত হিসেবে বিআর২৬, ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান৪৮, ব্রি ধান৫৫, ব্রি ধান৮২ ও ব্রি ধান৮৫ এবং বোনা আউশের উফশী জাত হিসেবে বিআর২০, বিআর২১, বিআর২৪, ব্রি ধান৪২, ব্রি ধান৪৩, ব্রি ধান৮৩ আবাদ করা যায়।

 

বীজতলা
দোঁ-আশ ও এঁটেল মাটি বীজতলার জন্য ভালো। বীজতলার জমি উর্বর হওয়া প্রয়োজন। যদি অনুর্বর হয় তাহলে প্রতি বর্গমিটার জমিতে ১.০০-১.৫ কেজি  হারে জৈবসার ছড়িয়ে দিতে হবে এর পর ৫-৬ সেমি. পানি দিয়ে ২-৩টি চাষ ও মই দিয়ে ৭-১০ দিন রেখে দিতে হবে এবং পানি ভালোভাবে আটকিয়ে রাখতে হবে। আগাছা, খড় পচে গেলে আবার চাষ ও মই দিয়ে কাদা করে জমি তৈরি করতে হবে। এবার জমির দৈর্ঘ্য বরাবর ১ মিটার চওড়া বেড তৈরি করতে হবে।  দুই বেডের মাঝখানে ৪০-৫০ সেমি. জায়গা ফাঁকা রাখতে হবে। বীজতলায় প্রতি বর্গমিটার বেডে ৮০-১০০ গ্রাম অঙ্কুরিত বীজ সমানভাবে বুনে দিতে হবে। জাতভেদে বীজের হার ৪০-৫০ কেজি/হেক্টর।

 

জমি তৈরি  ও সার প্রয়োগ
জমিতে প্রয়োজন মতো পানি দিয়ে মাটির প্রকারভেদে ২-৩টি চাষ ও মই দিতে হবে, যেন মাটি থকথকে কাদাময় হয়। জমি উঁচু-নিচু থাকলে সমান করে দিতে হবে। অধিক ফলন পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত জৈবসারসহ সুষম মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করুন। রোপা আউশে  হেক্টরপ্রতি ১৩০ কেজি ইউরিয়া,  ৫৫ কেজি টিএসপি, ৬ কেজি এমওপি এবং বোনা আউশে  ১২০ কেজি ইউরিয়া, ৫০ কেজি টিএসপি, ৫৫ কেজি এমওপি সার ব্যবহার করুন। টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার ব্যবহার করা হলে টিএসপি সারের সমপরিমাণ ডিএপি সার ব্যবহার করে প্রতি কেজি ডিএপি সার ব্যবহারের জন্য ৪০০ গ্রাম হারে ইউরিয়া কম ব্যবহার করতে হবে। মাটি পরীক্ষার ভিত্তিতে সার ব্যবহার করা উত্তম। ইউরিয়া সার তিন কিস্তিতে (প্রথম কিস্তি জমি শেষ চাষের সময়, দ্বিতীয় কিস্তি চারা রোপণের ১৫ দিন পর, তৃতীয় কিস্তি কাইচথোড় আসার ৫-৭ দিন আগে) এবং অন্যান্য সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়ার পরিবর্তে গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে ফলন বাড়ে এবং সারের কার্যকারিতা ২০-২৫ ভাগ বৃদ্ধি পায়। গুটি ইউরিয়া প্রতি চার গোছার মাঝখানে একটি করে প্রয়োগ করতে হয়। আউশ ধানের ১.৮ গ্রাম ওজনের গুটি ব্যবহার করুন। গুটি ইউরিয়া ব্যবহার করলে আউশ মৌসুমে প্রতি হেক্টরে ৬৫ কেজি ইউরিয়া সাশ্রয় হয়।

 

চারা রোপণ
সাধারণভাবে ২০-২৫ দিনের চারা রোপণ করা উচিত। রোপণের সময় জমিতে ছিপছিপে পানি থাকলেই চলে। ১ হেক্টর জমিতে ৮-১০ কেজি বীজের চারা লাগে। সারিতে চারা রোপণ করতে হবে। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫ সেমি. এবং চারা থেকে চারার দূরত্ব ১৫-২০ সেমি. হবে।

 

পরিচর্যা
আউশের জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে প্রয়োজনে নিড়ানি যন্ত্র ব্যবহার করে ২-৩টি নিড়ানি দিতে হবে। অনুমোদিত  আগাছানাশক ব্যবহার করেও আগাছা দমন করা যায়। জমিতে রসের অভাব হলে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা সম্পূরক সেচের ব্যবস্থা নিতে হবে। ধানের চারা রোপণের পর জমিতে ১০-১২ দিন ছিপছিপে পানি রাখতে হবে, যাতে নতুন শিকড় গজাতে পারে, এর পর কম পানি রাখলেও চলবে। সম্পূরক সেচযুক্ত ধানের ফলন হেক্টরে প্রায় ১ টন বেশি হয়।

 

পোকামাকড়  ও রোগবালাই
পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনের জন্য নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করতে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করতে হবে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে রোপা আউশের জমিতে  ৮-১০ ফুট দূরে দূরে ধৈঞ্চার চারা রোপণ করতে হবে অথবা কয়েকটি বাঁশের কঞ্চি/গাছের ডাল পুঁতে দিতে হবে। বাদামি গাছফড়িং দমনে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। ধানের নিবিড় চাষাবাদের কারণে ফসলের পেকার প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। এসব পোকার মধ্যে রয়েছে- মাজরা পোকা, পামরি পোকা, বাদামি গাছ ফড়িং, গান্ধী পোকা, লেদা পোকা, চুঙ্গি পোকা, ঘাসফড়িং, ছাত্রা পোকা, থ্রিপস্ ইত্যাদি। দশটি প্রধান রোগ ধানের ক্ষতি করে। এগুলো হচ্ছেÑ টুংরো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত পোড়া, উফরা, ব্লাস্ট, খোলপোড়া, বাকানি, বাদামি রোগ ইত্যাদি। এসব পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ধানের ফলন বৃদ্ধি হবে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় কৃষি বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।

 

ফসল কর্তন
শতকরা আশি ভাগ ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে কাটার ব্যবস্থা করতে হবে। কাটা ধান স্তূপ না করে দ্রুত মাড়াইয়ের ব্যবস্থা নিতে হবে। খাবার ধান যথাসম্ভব শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। বীজ ধান ৩-৪ দিন রোদে শুকিয়ে ১২% আর্দ্রতায় বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আউশ ধান কাটার উপযুক্ত সময় ১৫ শ্রাবণ-২০ ভাদ্র (৩০জুলাই- ৪ সেপ্টেম্বর)।

 

ধানের বীজ সংরক্ষণ
ভালো ফলন পেতে হলে ভালো বীজের প্রয়োজন। এজন্য যে জমির ধান ভালোভাবে পেকেছে, রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি এবং আগাছামুক্ত সেসব জমির ধান বীজ হিসেবে রাখা। ধান কাটার আগেই বিজাতীয় (ড়ভভ-ঃুঢ়ব) গাছ সরিয়ে ফেলতে হবে। যেসব গাছের আকার-আকৃতি, শিষের ধরন, ধানের আকার-আকৃতি, রঙ ও শুঙ এবং ধান পাকার সময় জমির আিধকাংশ গাছ থেকে একটু আলাদা সেগুলোই বিজাতীয় গাছ। সব রোগাক্রান্ত গাছও অপসারণ করতে হবে। এরপর ফসল কেটে মাঠে শুকনো স্থানে রাখতে হবে এবং আলাদা মাড়াই, ঝাড়াই করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে মজুদ করতে হবে। বীজ ধান মজুদের সময় যেসব পদক্ষেপ নেয়া উচিত সেগুলো হলো-
* রোদে ৫-৬ দিন ভালোভাবে শুকানো যাতে বীজের আর্দ্রতা শতকরা ১২ ভাগের নিচে থাকে। দাঁত দিয়ে বীজ কাটলে যদি কটকট শব্দ হয় তাহলে বুঝতে হবে বীজ ঠিকমতো শুকিয়েছে। পুষ্ট ধান বাছাই করতে কুলা দিয়ে কমপক্ষে দুইবার ঝেড়ে নেওয়া যেতে পারে।
* বায়ুরোধী পাত্রে বীজ রাখতে হবে। বীজ রাখার জন্য প্লাস্টিকের ড্রাম উত্তম তবে বায়ুরোধী মাটি বা টিনের পাত্রে রাখা যায়। মাটি মটকা বা কলসে বীজ রাখলে গায়ে দুইবার আলকাতরার প্রলেপ দিয়ে শুকানো। আর্দ্রতা রোধক মোটা পলিথিনেরও বীজ মজুদ করা যেতে পারে।
* রোদে শুকানো বীজ ঠা-া করে পাত্রে ভরা। পুরো পাত্রটি বীজ দিয়ে ভরে রাখা। যদি বীজে পাত্র না ভরে তাহলে বীজের ওপর কাগজ বিছিয়ে তার ওপর শুকনো বালি দিয়ে পাত্র পরিপূর্ণ করা।
* পাত্রের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে যেন বাতাস ঢুকতে না পারে। এবার এমন জায়গায় রাখা যেন পাত্রের তলা মাটির সংস্পর্শে না আসে।
* টনপ্রতি ধানে ৩.২৫ কেজি নিম, নিশিন্দা বা বিষকাালি পাতার গুঁড়া মিশিয়ে গোলাজাত করলে পোকার আক্রমণ হয় না। বীজের ক্ষেত্রে ন্যাপথলিন বল ব্যবহার করা যায় তবে অবশ্যই বীজ ধান প্লাস্টিক ড্রামে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

মাহমুদ হোসেন

সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অব.) বিএডিসি; মোবাইল : ০১৮৩৭৩৫৩৯৭০ ই-মেইল : mahmood1945bd@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon